অভিষেক কবিতার প্ৰশ্ন উত্তর saq Study Learn
অভিষেক কবিতার ছোট প্ৰশ্ন উত্তর
অভিষেক কবিতার প্ৰশ্ন উত্তর saq: প্রশ্ন ।। উঠিল পবন-পথে’—পবন-পথ মানে কী? পবনপথে কী উঠল?
অভিষেক কবিতার প্ৰশ্ন উত্তর saq:উওর : পবন-পথ মানে আকাশপথ। পবন-পথে ইন্দ্রজিতের রথ উঠল।
– প্রশ্ন ।। ‘শিঞ্জিনী আকর্ষি রােষে,—বাক্যাংশটির অর্থ কী?
উওর : বাক্যাংশটির অর্থ হলাে ধনুকের ছিলা ক্রোধবশে (প্রবলভাবে) টেনে।
প্রশ্নঃ) ‘টঙ্কারিলা ধনুঃ—অর্থ কী?
উত্তর : ধনুকে টঙ্কার দিলেন। ধনুকের ছিলা টেনে ছাড়ার শব্দ হলাে টঙ্কার।
প্রশ্ন ) কাঁপিলা লঙ্কা, কাপিলা জলধি!’—অর্থ কী? কেন কাঁপল?
উত্তর : লঙ্কা রাজ্যটি কেঁপে উঠল। সমুদ্র কেঁপে উঠল। যুদ্ধে উদ্যত ইন্দ্রজিতের ধনুকের টঙ্কারে কেঁপে উঠল।
প্রশ্ন ) “উড়িছে কৌশিক-ধ্বজ;- কৌশিক-ধ্বজ কী?
– উত্তর : কৌশিক-ধ্বজ হলাে ইন্দ্ৰধ্বজ-ইন্দ্রের রথ-পতাকা। ইন্দ্রজয়ী ইন্দ্রজিৎ রথে চেপে যুদ্ধে গিয়েছেন। সে পতাকা উড়ছে।
প্রশ্নঃ।। ‘রাক্ষস-কুল-শেখর তুমি,’—কে, কাকেবলছেন? বাক্যাংশের অর্থ কী?
উত্তর : রাবণ বলছেন পুত্র মেঘনাদ ইন্দ্রজিৎকে।
রাক্ষসবংশের চূড়ামণি, শ্রেষ্ঠ বীর।
প্রশ্ন ) হায়, বিধি বাম মম প্রতি।’-বক্তা কে? বিধি বাম মানে কী?
উত্ত: বক্তা হলেন লঙ্কাধিপতি রাবণ। ভাগ্যবিধাতা তাঁর প্রতি প্রতিকূল, এটাই অর্থ
প্রশ্ন ।। ‘অসুরারি-রিপু,–এর অর্থ কী?
: = উত্তর : অসুরের অরি (শত্রু) = অসুরারি (দেব)। অসুরারিররিপু (শ) = অসুর। অর্থাৎ ইন্দ্রজিৎ।
প্রশ্ন ) এ কলঙ্ক, পিতঃ, ঘুষিবে জগতে।’—কোন্ কলঙ্ক জগতে ছড়াবে?
উত্তর : পুত্র ইন্দ্রজিৎ থাকতে থাকতে, পিতা রাবণ যুদ্ধে গেলে, ইন্দ্রজিতের নামে কলঙ্ক জগতে ছড়াবে।
প্রশ্নঃ।। মেঘবাহন কে? কেন তিনি মেঘবাহন?
: উত্তর : মেঘবাহন হলেন ইন্দ্র। মেঘে, আকাশে তার যান বা রং চলে, তাই তিনি মেঘবাহন।
প্রশ্নঃ।। ‘হাসিবে মেঘবাহন;’- কে হাসবে?
উত্তর : পুত্র ইন্দ্রজিতের উপস্থিতি সত্ত্বেও পিতা রাবণ যুদ্ধে গেলে, ইন্দ্রজিতের ভীরুতা প্রকাশ পাবে। তাই ইন্দ্রজিতের কাছে পরাজিত ইন্দ্র হাসবে।
প্রশ্ন ) ‘দেহ তার, দেখ, সিন্ধুতীরে ভূপতিত,’—বক্তব্যটি বুঝিয়ে দাও।
উত্তর : বলীয়ান ভাই কুম্ভকর্ণকে অকালে জাগিয়েছিলেন রাবণ। অকালে ঘুম ভাঙার কারণে যুদ্ধে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। তাঁর দেহ সমুদ্রতীরে মাটিতে পড়ে আছে।
প্রশ্ন ) নিকুম্ভিলা যজ্ঞ সাঙ্গ কর,-কাকে, কেন এ কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : পিতা রাবণ কর্তৃক পুত্র ইন্দ্রজিৎকে বলা হচ্ছে। নিকুম্ভিলা যজ্ঞ সমাপন করে যুদ্ধে গেলে, ইন্দ্রজিৎ সে যুদ্ধে অজেয় হবেন, এটাই ইন্দ্রজিতের প্রতি ইষ্টদেব অগ্নির আশীর্বাদ।
প্রশ্ন ।। ‘অস্তাচলগামী দিননাথ এবে; বাক্যের অর্থ পরিস্ফুট করাে। বক্তা এরপর কী বলেছেন?
উওর: দিননাথ সূর্য অস্তে যাচ্ছেন, অর্থাৎ রাত্রি আসছে।
বক্তা এরপর বলেছেন, রামচন্দ্রের সঙ্গে প্রভাতে ইন্দ্রজিৎ যেন যুদ্ধ করেন।
প্রশ্ন ) ‘অভিষেক করিলা কুমারে।’—কীভাবে অভিষেক করা হলাে?
উত্তর : পিতা রাবণ পুত্ৰ ইন্দ্রজিৎকে যুদ্ধ করার জন্য সেনাপতি পদে বরণ করলেন। যথাবিধি গঙ্গাজল সিঞ্চন করে অভিষেক করা হলাে।
প্রশ্ন ।। “কে কবে শুনেছে পুত্র, ভাসে শিলা জলে, বক্তার এমন মন্তব্যের কারণ কী?
উত্তর : রামচন্দ্রের মরে পুনরায় বেঁচে ওঠা সম্পর্কে সন্দেহবশত লঙ্কেশ্বর রাবণ উক্ত মন্তব্যটি করেছেন।শিলা বা পাথরের জলে ভাসার মতােই মৃত ব্যক্তি বেঁচে ওঠাও অবিশ্বাস্য ব্যাপার বলে রাবণের মত।
প্রশ্ন ।। “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি-সুতা” কেন ইন্দ্রজিতের কাছে এসেছিলেন?
উত্তর : ‘ছদ্মবেশী অম্বুরাশি-সুতা’ হলেন ইন্দ্রজিতের ধাই-মা প্রভাষা। তিনি সমুদ্র-কন্যা লক্ষ্মীর ছদ্মবেশে প্রমােদ উদ্যানে ইন্দ্রজিতের কাছে ভ্রাতার মৃত্যুসংবাদ এবং শােকার্ত লঙ্কেশ্বরের রণসজ্জায় সজ্জিত হওয়ার কথা জানাতে এসেছিলেন।
প্রশ্ন ) ‘কিন্তু অনুমতি দেহ,’-কে, কীসের অনুমতি চেয়েছেন?
উত্তর : লঙ্কার অলঙ্কার বীর ইন্দ্রজিৎ লঙ্কেশ্বর রাবণের কাছে মায়াবী যােদ্ধা রামচন্দ্রকে সমূলে নির্মূল করা অনুমতি প্রার্থনা করেছেন।
প্রশ্ন ।। ‘এ মায়া পিতঃ বুঝিতে না পারি।’-বক্তা কোন্ মায়া বুঝতে পারছেন না?
উত্তর : যে যােদ্ধাকে নিশারণে বক্তা হত্যা করেছেন, শর নিক্ষেপ করে শত্রুদলকে খণ্ড খণ্ড করে কেটেছেন, নিহত সেই যােদ্ধা কোন মায়াবলে বেঁচে উঠে বীরবাহুকে হত্যা করেন, এই মায়া বক্তা বুঝতে পারছেন না।
অভিষেক কবিতার প্ৰশ্ন উত্তর saq: প্রশ্ন ) তার শােকে মহাশােকী রাক্ষসাধিপতি’রাক্ষসাধিপতি কার শােকে শােকগ্রস্ত?
উত্তর : মায়াবী যােদ্ধা শ্রীরামচন্দ্র লঙ্কেশ্বর রাবণের প্রিয়পুত্র বীরবাহুকে হত্যা করেছেন; তাই পুত্র হারানাের শােকে লঙ্কেশ্বর শােকগ্রস্ত হয়েছেন।
প্রশ্ন ) কেবধিল কবে প্রিয়ানুজে?’—এই প্রশ্নের উত্তরে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী বলেছেন?
উত্তর : ইন্দ্রজিতের এই প্রশ্নের উত্তরে ধাত্রী-মা প্রভাষার ছদ্মবেশী রমা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন যে, মায়াবী মানব সীতাপতি তার শরে মরেও বেঁচে উঠেছেন।
প্রশ্ন।। ‘বাঁধিয়া আনিয়া দিব রাজপদে’-কে, কাকে রাজপদে বেঁধে এনে দিতে চেয়েছেন?
উ : বীর ইন্দ্রজিৎ মায়াবী যােদ্ধা রামচন্দ্রকে যুদ্ধে পরাস্ত করে বেঁধে এনে রাজপদে দিতে চেয়েছেন।
প্রশ্নঃ।। ‘কাঁপিলা লঙ্কা’ –লঙ্কার কেঁপে ওঠার কারণ কী?
উ : লঙ্কার উদ্দেশে যাত্রাকালে ইন্দ্রজিৎ রথে উঠে সরােযে টঙ্কার দেন ধনুতে, ভয়ংকর সেই টঙ্কার পক্ষীন্দ্র গরুড়ের চিৎকারের মতো শােনা যায়। এই শব্দে লঙ্কা কেঁপে ওঠে।
প্রশ্নঃ।।‘তব শরে মরিয়া বাঁচিল’-কার শরে কে মরে বাঁচল?
উওর : ধাত্রী-মা প্রভাষার ছদ্মবেশী রমা ইন্দ্রজিৎকে জানিয়েছেন যে, ইন্দ্রজিতের শরে মরে গিয়েও বেঁচে উঠেছেন মায়াবী যােদ্ধা রামচন্দ্র।
প্রশ্ন ) পক্ষীন্দ্র যথা নাদে মেঘ মাঝে/ভৈরবে। – পক্ষীন্দ্র কে?
উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে অংশটি উদ্ধৃত হয়েছে। এখানে পক্ষীন্দ্র বলতে পক্ষীদের মধ্যে ইন্দ্র অর্থাৎ, প্রধান গরুড় পাখিকে বােঝানাে হয়েছে।
প্রশ্ন ) ‘নাহি চাহে প্রাণ মম’-কী চায় না বক্তার প্রাণ?
উত্তর : বক্তার অর্থাৎ, লঙ্কেশ্বর রাবণের প্রাণ প্রিয় পুত্র ইন্দ্রজিৎকে মায়াবী যােদ্ধা রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠাতে চায় না। কারণ বিধাতা তাঁর প্রতি বাম অর্থাৎ, প্রতিকূল।
প্রশ্ন ) ‘অভিষেক’ কবিতায় রাবণ ইন্দ্রজিৎকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য কী করতে বললেন?
উত্তর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের অভিষেক কবিতায় লঙ্কেশ্বর রাবণ পুত্র ইন্দ্রজিৎকে যুদ্ধে যাওয়ার আগে ইষ্টদেবকে পুজো করতে এবং নিকুম্ভিলা যজ্ঞ সাঙ্গ করতে বলেছেন।
প্রশ্ন ) ‘নাদিলা কর্বুরদল’ -কর্বুরদললের ‘নাদ’-এর কারণ কী? –
উত্তর : কর্বুরদল অর্থাৎ, রাক্ষস সেনাদল বীরবাহুর মৃত্যুতে লঙ্কেশ্বর রাবণের নির্দেশে রণসাজে সজ্জিত হচ্ছিল, এই অবস্থায় বীর ইন্দ্রজিৎকে দেখে তাদের রণােল্লাস তীব্র হয়ে ওঠে এবং তারা উচ্চনাদে ফেটে পড়ে।
প্রশ্ন ।। ‘প্রভাতে যুঝিও, বৎস, কেন প্রভাতে যুদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে?
উওর : বক্তা রাবণ একজন সমরকুশলী যােদ্ধা। তিনি রাত্রিকালীন যুদ্ধের অসুবিধাগুলি বুঝতে পারেন। মায়াবী যােদ্ধার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ আরও ভয়ানক। তাই পুত্রকে প্রভাতে যুদ্ধ করতে বলেছেন।
প্রশ্ন ) ‘আগে পূজ ইষ্টদেবে’-বক্তা ইষ্টদেবকে কেন আগে পুজো করতে বলেছেন?
উত্তর : বক্তা রাবণ একজন দেবনির্ভর রাজা। কিন্তু বিধাতা তার প্রতি বিরূপ। তাই প্রাণাধিক প্রিয় পুত্রকে ইষ্টদেবের পুজো দিয়ে তার আশীর্বাদ নিয়ে যুদ্ধে যেতে বলেছেন।
প্ৰয় ) ‘ঘুচাব ও অপবাদ’-কোন অপবাদ ৰকা কীভাবে ঘোচাবেন?
উ : ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ তথা ‘মেঘনাদ বধ’ কাব্যের প্রধান চরিত্র ইন্দ্রজিতের কণ্ঠে এই বীরােচিত প্রতিজ্ঞাবাক্য ঘােষিত হয়েছে। ভ্রাতাবীরবাহু মায়াবী যােদ্ধা রামচন্দ্রের হাতে নিহত হওয়ায় শােকার্ত লঙ্কেশ্বর যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, লঙ্কা শত্রু পরিবেষ্টিত, এই অবস্থায় লঙ্কার ত্রিলােকজয়ী বীরপুত্র ইন্দ্রজিৎ প্রমােদ-উদ্যানে বামাদের সঙ্গে আমােদ-প্রমােদে মত্ত, এটা বড়াে লজ্জার ব্যাপার। বীরের পক্ষে এটা একটা বিরাট অপবাদ। বীরশ্রেষ্ঠ ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার জানিয়ে এই অপবাদ ঘােচানাের উপায় হিসেবে যুদ্ধযাত্রার উদ্যোগ নিয়েছেন। শত্রুকুলকে নিধন করে তিনি ঘােচাবেন তার অপবাদ।
প্রশ্ন ) রক্ষ রক্ষঃকুল-/মান, এ কালসমরে রক্ষঃচূড়ামণি!’- কাকে রক্ষচুড়ামণি বলা হয়েছে? বক্তা কালসমর বলতে কী বুঝিয়েছেন?
উওর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশে রক্ষচূড়ামণি বলে সম্বােধন করা হয়েছে লঙ্কার বীর যােদ্বা ইন্দ্রজিৎকে।
কালসমর কথাটি বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায় কাল রূপ সমর কিংবা কাল ঘনিয়ে তােলে যে সমর। কাল’ কথাটির অর্থ হলাে মৃত্যু, ব্যাপকার্থে ধ্বংস। রামচন্দ্রের সঙ্গে লঙ্কেশ্বরের যে যুদ্ধ বেধেছিল তা লঙ্কার কাল ঘনিয়ে এনেছিল। যুদ্ধে লঙ্কার বীর সন্তানদের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বীরবাহুর, কুম্ভকর্ণের। ধ্বংসযজ্ঞ চলছে নিরন্তর। মায়াবী যােদ্ধা রামচন্দ্রের সঙ্গে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি বােঝা যাচ্ছে না। তবে ঘটে যাচ্ছে লকার ভাগ্য বিপর্যয়। এখন শেষ মহারথী লঙ্কেশ্বর যুদ্ধে যেতে উদ্যত।
প্রশ্ন।। ‘ জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া’- কাকে মহাবাহু বলা হয়েছে? তার বিস্ময়ের কারণ কী?
উওর : মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশে উল্লিখিত মহাবাহু হলেন লঙ্কার অলঙ্কার বীর ইন্দ্রজিৎ।
ইন্দ্রজিৎ সীতাপতি রামচন্দ্রকে নিশারণে পরাস্ত এবং নিহত করেছেন। শর নিক্ষেপ করে খণ্ড খণ্ড করে কেটেছেন শত্রুদের। যুদ্ধজয়ের আনন্দে প্রমােদ-উদ্যানে বামাদের সঙ্গে তিনি যখন আমােদ-প্রমােদে মত্ত তখন ধাত্রী-মা প্রভাষার ছদ্মবেশী রমার মুখে শুনতে পান বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ। সীতাপতি রামচন্দ্র তাকে হত্যা করেছেন। তিনি লঙ্কার দশাও করুণ করে তুলেছেন। যে সীতাপতিকে ইন্দ্রজিৎ স্বয়ং হত্যা করেছেন, তার পক্ষে বেঁচে ওঠা এবং বীরবাহুকে হত্যা করা কীভাবে সম্ভব! এই কথা ভেবে তিনি > বিস্মিত।
প্রশ্নঃ।। ‘হা ধিক মােরে’—কে, কেন নিজেকে ধিক্কার দিয়েছেন?
উওর: ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের প্রধান চরিত্র ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার দিয়েছেন।
ইন্দ্রজিৎ যখন প্রমােদ-উদ্যানে বামাদের সঙ্গে আমােদপ্রমােদে মত্ত তখন ধাত্রী-মা প্রভাষার ছদ্মবেশী রমার মুখে ভ্রাতা বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ পান। তিনি আরও জানতে পারেন শােকার্তলঙ্কেশ্বররণসজ্জায় সজ্জিত হচ্ছেন। এই সংবাদ ইন্দ্রজিৎকে বিস্মিত এবং অপরাধী করে তােলে। মাতৃভূমি যখন বিপদাপন্ন, দেশের বীর সন্তান যখন শত্রুর হাতে নিহত তখন ইন্দ্রজিতের মতাে স্বদেশপ্রাণ, ত্রিলােকজয়ী বীরের পক্ষে আমােদ-প্রমােদের সময় কাটানাে লজ্জাকর। তাই ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার দিয়েছেন।
প্রশ্ন ) ‘হায়, বিধি বাম মম প্রতি’-বক্তা কে? তিনি এমনকথা বলেছেন কেন?
উত্তর: ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে উদ্ধৃত এই অংশটির বক্তা হলেন লঙ্কেশ্বর রাবণ।
ভ্রাতা বীরবাহুর মৃত্যুতে ব্যথিত, ক্রুদ্ধ ইন্দ্রজিৎ সীতাপতি রামচন্দ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি চাইলে পুত্রস্নেহকাতর রাবণ বিচলিত হয়ে পড়েন। লঙ্কায় যা ঘটে যাচ্ছে তা শুধু দুর্ভাগ্যজনক নয়, অবিশ্বাস্য। শিলা জলে ভাসছে, মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়ে যুদ্ধ করছে। মৃত্যু হচ্ছে বলশালী মহাবীরদের। কুম্ভকর্ণ নিহত। নিহত বীর পুত্র বীরবাহু। এই অবস্থায় ইন্দ্রজিতের যুদ্ধে যাওয়া যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। লঙ্কেশ্বরের প্রাণাধিক প্রিয়পুত্র ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার একমাত্র ভরসা। তাকে যুদ্ধে পাঠাতে বক্তার ভয় করে; তাই তিনি এই উক্তি করেন।
প্রশ্ন ।। ‘হাসিবে মেঘবাহন;’-কার উক্তি? মেঘবাহন কেন হাসবে?
উত্তর: উক্তিটি ইন্দ্রজিতের।
যুদ্ধে ইন্দ্রকে জয় করেছিলেন বলেই তিনি ইন্দ্রজিৎ। সেই ইন্দ্রজিৎবর্তমানে তার পিতা দুর্ধর্ষরণে যাবেন, আর ইন্দ্রজিৎবামাদল মাঝে বিলাস করবেন, এটা একান্ত অনুচিত। এতে ইন্দ্রজিতেরই আত্ম-অপমান। ইন্দ্রজিতের কাছে পরাজিত ইন্দ্র যখন এই সংবাদ শুনবেন, এই দৃশ্য দেখবেন, তখন ইন্দ্রজিতের ভীরুতার কথা ভেবে খুব হাসবেন। সেটাও কি সইবার ? মেঘের মধ্যে থেকে যুদ্ধ করতেন বলে ইন্দ্র মেঘবাহন, আর ইন্দ্রজিৎ মেঘনাদ